shrestonews
ঢাকাআজ: শুক্রবার,১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ/১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তিন কারণে ছাপানো হচ্ছে না নতুন টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১৪, ২০২৫ ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ । ১৭ জন
Link Copied!
একাত্তর পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঈদ উৎসবে দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সেলামিতে নতুন টাকা দেয় অনেকে। এ কারণে বিশেষ দিনটির আগে চাহিদা বাড়ে ঝকঝকে টাকার। চাহিদাকে সামনে রেখে প্রতিবছর নতুন টাকা বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবারও ২১১ কোটি টাকা ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। হিসাব বলছে, প্রতিবছর কমছে নতুন টাকা ছাড়ার পরিমাণ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রতি ঈদে ঘটা করে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা ছাপানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ এতে অনেক খরচ।

৫ আগস্ট দেশের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের পর টাকার নকশায় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই টাকা বাজারে আসতে আরো মাস দেড়েক সময় প্রয়োজন। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবারের ঈদে নতুন টাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।

গত সপ্তাহে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল, আগামী ১৯ মার্চ থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবে গ্রাহকরা।

২৫ মার্চ পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) নতুন নোট বি‌নিময় করতে পারবে সাধারণ মানুষ। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের ৮০টি শাখা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন অফিসের মাধ্যমে ৫, ২০ ও ৫০ টাকা মূল্যমানের নতুন নোট বিশেষ ব্যবস্থায় বিনিময় করা হবে। কিন্তু ১০ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, আমরা ধীরে ধীরে অনলাইনভিত্তিক লেনদেনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই নগদ টাকার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। এটার জন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইন্টার অপারেবিলিটি সক্রিয়ভাবে চালু করা খুব দরকার। আমরাও সে চেষ্টাই করছি। এক ব্যাংকের সঙ্গে অন্য ব্যাংক এবং এক মোবাইল অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরের মধ্যে আন্ত লেনদেন চালু করতে পারলে নগদ টাকার প্রয়োজনীয়তা এমনিতেই কমে যাবে। যেহেতু এখনো ভালোভাবে অপারেবিলিটি কাজ করছে না, তাই ক্যাশেই লেনদেন করতে হচ্ছে। ঈদের পরপরই নতুন নকশার নোট পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়

এদিকে প্রতিবছর নতুন টাকা ছাপাতে সরকারের খরচ হয় সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা। কোনো বছর ৭০০ কোটিও ছাড়িয়ে যায়। কারণ নানা কারণে টাকা নষ্ট হয়। প্রতিবছর বাংলাদেশ ব্যাংক নষ্ট নোট বাজার থেকে তুলে নিয়ে তার বিপরীতে নতুন নোট ছাড়ে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, এক হাজার টাকার নোট ছাপাতে পাঁচ টাকা ও ৫০০ টাকার নোট ছাপাতে খরচ পড়ে চার টাকা ৭০ পয়সা। ২০০ টাকার নোটে তিন টাকা ২০ পয়সা, ১০০ টাকার নোটে চার টাকা এবং ১০, ২০, ৫০ টাকার সব নোটেই দেড় টাকা। আর পাঁচ টাকা ও দুই টাকার নোট ছাপাতে খরচ পড়ে এক টাকা ৪০ পয়সা। সবচেয়ে বেশি খরচ হয় কয়েন তৈরিতে। প্রতিটি কয়েনে প্রায় সমপরিমাণ টাকা খরচ হয়। তবে কয়েন বেশি টেকসই। নোট ছাপানোর খরচের কথা চিন্তা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা তথা ক্যাশলেস ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে। তবে বিশ্বব্যাপী কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে এই খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।