ঘি দিয়ে ভাত আমরা অনেকেই পছন্দ করি। দেশি ঘি (Ghee) গরম খাবার এবং হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পান করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। আয়ুর্বেদে, ঘি ‘স্বর্ণ’ অর্থাৎ ‘সোনার’ সমতুল্য বলে বিবেচিত হয়। এটি কেবল খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানি এক চামচ ঘি মিশিয়ে পান করার অভ্যাস আপনার শরীরের নানাভাবে উপকার করতে পারে।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, হালকা গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে পান করা একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার (Ghee), যা হজম ব্যবস্থা শক্তিশালী করা থেকে শুরু করে ত্বক ও চুল সুস্থ রাখা পর্যন্ত অনেক উপকার দেয়। এমনকি সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে এটি।
আসুন জেনে নিই হালকা গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে পান করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কী কী উপকারিতা (Health) দেবে?
ঘিতে উপস্থিত বিউটিরিক অ্যাসিড, হজম প্রক্রিয়ার জন্য খুবই উপকারী। এটি অন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং হজমশক্তি উন্নত করে। হালকা গরম পানির সাথে ঘি মিশিয়ে পান করলে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অ্যাসিডিটির মতো পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি অন্ত্র পরিষ্কার করে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ঘি-তে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের বিপাক বৃদ্ধি করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হালকা গরম পানির সাথে ঘি মিশিয়ে খেলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এটি শরীরে শক্তি সরবরাহ করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস রোধ হয়।
ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী ঘিতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং উজ্জ্বল করে তোলে। এছাড়াও, এটি চুলকে শক্তিশালী এবং ঘন করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে পান করলে ত্বকের রঙ উন্নত হয় এবং চুল পড়া কম হয়।
ঘি-তে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি শরীরকে সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দেয়। হালকা গরম পানির সাথে ঘি মিশিয়ে পান করলে শরীরে তাপ বজায় থাকে, যা সর্দি-কাশির মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে।
ঘি-তে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য জয়েন্টের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি জয়েন্টগুলিকে নমনীয় করে তোলে এবং শক্তিশালী করে। নিয়মিত ঘি পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য জয়েন্ট সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ঘিতে উপস্থিত ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। এটি স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। হালকা গরম পানির সাথে ঘি মিশিয়ে পান করলে মন শান্ত হয় এবং ঘুমের মান উন্নত হয়।
ঘিতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর চর্বি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ঘি মহিলাদের পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা কমায় এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করে।