সুনামগঞ্জের শাল্লা, দিরাই, জামালগঞ্জ উপজেলায় ঘোষণা দিয়ে ইজারাকৃত বৈধ জলমহালের মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে লুটে নেওয়া হয়েছে তিন উপজেলার অন্তত ১০টি জলমহালের মাছ। মাইকিং করে জলমহালের আশপাশের কয়েক ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতা জলমহালগুলোর কোটি কোটি টাকার মাছ লুটে নেয়।
গত বুধবার (৫ মার্চ) দিরাই উপজেলার মেধা বিল ও বেতরগাং জলমহাল এবং জামালগঞ্জ উপজেলার আইলা বিল লুট করেছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। পূর্ব ঘোষণা দিয়ে লুট চালালেও হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতার সামনে যেন অসহায় প্রশাসন।
এদিকে, জলমহালের কোটি কোটি টাকার মাছ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন ইজারাদাররা। সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, বুধবার দিরাই উপজেলার মেধা ও বেতর বিলে জাল, পলো, কুচা হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়। মিছিল করে তারা পানিতে নেমে লুটে নেয় মাছরাঙ্গা মৎস্যজীবী সমিতির নামের ইজারাকৃত বিলের কোটি টাকার মাছ। একই কায়দায় জামালগঞ্জ উপজেলার আইলা বিলেও পূর্ব ঘোষণা দিয়ে মাছ লুটে নেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন ও বিলের ইজারাদার জানান, আগের রাতেই মাইক ও মোবইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিল লুটের খবর। ভোর থেকে বিলের পাড়ে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। মাছ শিকারের সরঞ্জামের পাশাপাশি সঙ্গে দেশীয় অস্ত্রও নিয়ে আসেন উচ্ছৃঙ্খল জনতা। দিরাই-শাল্লা উপজেলার শ্যামারচর, ললোয়ারচর, মাইতি, চন্দ্রপুর, ইসলামপুর, সন্তোষপুর, কার্তিকপুর, নোয়াগাঁও, চিকাডুপি, বল্লবপুর, উজানগাঁও, সোনাকানি, নিজগাঁও, মির্জাপুর, রাহুতলা, শরিফপুর, কাশীপুরসহ আশপাশের গ্রামের উচ্ছৃঙ্খল লোকজন দিরাই-শাল্লার কামান ও লাইরা দীঘা, সতোয়া নদী, মেদা বিল ও বেতরগাং জলমহালের মাছ লুটে জড়িত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে বিল লুটের খবর পেয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে লুট না করার জন্য আকুতি জানান ইজারাদার। তাতেও কাজ না হলে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ভোরে বিলে উপস্থিত হয়েও রক্ষা করতে পারেননি নিজেদের জলমহাল। হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতার সামনে অসহায় ছিল পুলিশ ও ইজারাদার। লুটে নেওয়া হয় কোটি টাকার মাছ। জলমহাল লুটের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।